জেনে নিন ট্রাভেল ট্যাক্স ও পোর্ট ফি প্রদান জানা অজানা তথ্য

আপনারা যারা বেনাপোল স্থল বন্দর(হরিদারসপুর) দিয়ে যেতে চান তাদের জন্য এখন অনলাইনেই ট্রাভেল ট্যাক্স ও পোর্ট ফি প্রদান করার সুযোগ আছে।

অনলাইনেই ট্রাভেল ট্যাক্স ও পোর্ট ফি প্রদান করুন।

ভ্রমণ কর বা ট্রাভেল ট্যাক্স কত?

০১ জুলাই ২০২৩ তারিখ থেকে ট্রাভেল ট্যাক্স ফি বর্ধিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণ এবং বাংলাদেশ হইতে আকাশ, স্থল কিংবা পানি পথে অন্য কোনো দেশে গমনের(ভ্রমণ) ক্ষেত্রে যাত্রী প্রতি নিম্নবর্ণিত টেবিলে উল্লিখিত হারে ভ্রমণ কর দিতে হবে।

ক্রমিক নংভ্রমণের ধরণকরের পরিমাণ
(১)(২)(৩)
১।আকাশ পথে উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, চীন, জাপান, হংকং, উত্তর কোরিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া ও তাইওয়ান গমনের ক্ষেত্রে৬,০০০ (ছয় হাজার) টাকা
২।আকাশ পথে সার্কভুক্ত কোনো দেশে গমনের ক্ষেত্রে২,০০০ (দুই হাজার) টাকা
৩।আকাশ পথে অন্য কোনো দেশে গমনের ক্ষেত্রে৪,০০০ (চার হাজার) টাকা
৪।আকাশ পথে দেশের অভ্যন্তরে গমনের ক্ষেত্রে২০০ (দুই শত) টাকা
৫।স্থল পথে যেকোনো দেশে গমনের ক্ষেত্রে১,০০০ (এক হাজার) টাকা
৬।পানি পথে যেকোনো দেশে গমনের ক্ষেত্রে১,০০০ (এক হাজার) টাকা
এখানে জানার বিষয় হলো ৫ বছরের উপর থেকে ১২ বছর বয়সী ভ্রমণ কারীদের জন্য ভ্রমন কর অর্ধেক ।

ভ্রমণ কর বা ট্রাভেল ট্যাক্স দিতে হবে না যাদের

  1. ৫ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সের কোনো যাত্রী।
  2. হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে গমনকারী ব্যক্তি।
  3. অন্ধব্যক্তি বা ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী বা স্ট্রেচার ব্যবহারকারী পঙ্গু ব্যক্তি।
  4. জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্য।
  5. বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনীতিক মিশনের কূটনৈতিক মর্যাদাসম্পন্ন সদস্য ও তাঁদের পরিবারের সদস্য।
  6. বাংলাদেশে কর্মরত বিশ্বব্যাংক, জার্মান কারিগরি সংস্থা ও জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্য।
  7. বিমানে দায়িত্বরত ক্রু।
  8. বাংলাদেশের ভিসাবিহীন ট্রানজিট যাত্রী যাঁরা ৭২ (বাহাত্তর) ঘণ্টার অধিক সময় বাংলাদেশে অবস্থান করবেন না।
  9. যেকোনো বিমান সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি বিনা ভাড়ায় অথবা হ্রাসকৃত ভাড়ায় বিদেশে যাবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ভ্রমণ কর প্রযোজ্য হবে না।

ট্রাভেল ট্যাক্স কোথায় দিতে হয়?

বর্তমানে অনলাইনে ভ্রমণ কর দেওয়া যায়। এছাড়া সোনালী ব্যাংকের সকল শাখাতে ভ্রমন কর দেওয়া যায় ।

অনলাইনে কিভাবে ট্র্যাভেল ট্যাক্স জমা দিব?

বর্তমানে ভোমরা, গেদে ও বেনাপোল পোর্ট দিয়ে যদি ভারত ভ্রমন করতে চান তাহলে অনলাইনে দিতে পারবেন । অন্যথায় ব্যাংক থেকে সরাসরি ট্র্যাভেল ট্যাক্স দিতে হবে ।

অনলাইনে ট্র্যাভেল ট্যাক্স জমা দেওয়ার জন্য https://sbl.com.bd:7070/nbrTravelTax/Collection/Create

প্রথম নাম পাসপোর্ট অনুযায়ী , এরপর পাসপোর্ট নম্বর , ১২ বছরের বড় না ছোট সেটা সিলেক্ট করতে হবে। বাই রোড না বাই ওয়াটার সিলেক্ট করুন এরপর কোন দেশে যাচ্ছেন সেটা সিলেক্ট করুন। আপনার ফোন নম্বর দিন। সাবমিট করার পর আরেকটি পেজ আসবে সেখানে আবার চেক করে নিন। পেমেন্ট রিকোয়েস্ট এ ক্লিক করলে পেমেন্ট পেজে নিয়ে যাবে। পেমেন্ট করুন বিকাশ, নগদ,রকেট ,ইউপে, ট্যাপ , ভিসা, মাস্টার কার্ড, এমেক্স কার্ড দিয়ে পে করতে পারবেন । পেমেন্ট করার পর আপনার ট্যাক্সের ফর্ম চলে আসবে । ডাউনলোড করুন ও সেটা প্রিন্ট করে নিন।

এখানে বলে রাখা ভাল বিমান যদি বিদেশ ভ্রমন করতে চান তাহলে আপনাকে ট্র্যাভেল ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবে না । এমনকি ট্রেনে ভারত ভ্রমনের ক্ষেত্রেও আপনাকে ট্র্যাভেল ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবে না । টিকিটের সাথে ট্যাক্সের টাকা যুক্ত আছে।

ভ্রমন কর ছাড়া কি আর কোন ফি দিতে হয়?

হ্যাঁ, বেনাপোল ল্যান্ডপোর্ট দিয়ে ভারত ভ্রমন করতে চাইলে আপনাকে পোর্ট ফি জমা দিতে হবে।

পোর্ট ফিঃ

পোর্ট ফি কি?

পোর্ট ফি মূলত যাত্রী সুবিধা সেবা নেওয়ার জন্য যে অর্থ বন্দর কতৃপক্ষকে পরিশোধ করা হয়। বাংলাদেশ থেকে অন্যদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এই ফি পরিশোধ করা হয়। এই পোর্ট ফি বিমানে , সমুদ্র/ নদী পথ অথবা স্থল বন্দরের জন্য প্রযোজ্য।

বেনাপোল স্থল বন্দরে ৪৭.৪১ (Passenger Facilities Charge) + ৭.১১ (১৫% ভ্যাট ) = ৫৪.৫২ টাকা পরিশোধ করতে হয়। সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি তবে বুড়িমারি স্থল বন্দরে অনুরূপ অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয় ।

তবে বেনাপোল স্থল বন্দরের জন্য অনলাইনে পরিশোধের সুবিধা চালু করা হয়েছে।

অনলাইনে কিভাবে পোর্ট ফি প্রদান করবেন?

প্রথমে https://blpa.ekpay.gov.bd/ এই লিংকে ক্লিক করুন।

আপনার পাসপোর্ট অনুযায়ী নাম, মোবাইল নম্বর , ডিপার্টচার পোর্ট সিলেক্ট করুন, কান্ট্রি কোড সিলেক্ট করুন(আমাদের বাংলাদেশের কান্ট্রি কোর্ড BGD), আপনার পাসপোর্ট নম্বর লিখুন এবং কবে যাবেন সেই তারিখ সিলেক্ট করুন।

এরপর কিসের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে চান সেটা সিলেক্ট করুন। এরপর Pay বাটনে ক্লিক করুন। আমি বিকাশ সিলেক্ট করেছি। সিলেক্ট করার পরে আমি বাটনে ক্লিক করেছি। এরপর নতুন একটি পেজে গিয়ে বিকাশের পপ আপ বক্স এসেছে। এখানে যে বিকাশ থেকে টাকা পরিশোধ করবো সেই বিকাশ নম্বর দিয়ে কনফার্ম করলে আরেকটি পেজে যাবে । এই পেজে আপনার বিকাশ থেকে একটি ৬ ডিজিটের OTP (One Time Password) আপনার বিকাশ নম্বরে যাবে । OTP দিয়ে কনফার্ম করলে আরেকটি পেজে যাবে। সেখানে আপনার বিকাশ পিন দিয়ে কনফার্ম করলে আপনার পোর্ট ফি দেওয়া সম্পর্ন্ন হবে।

পেমেন্ট দেওয়া হয়ে গেলে আপনি পোর্ট ফি জমার রশিদ প্রিন্ট করে নিন । এতে করে বেনাপোল স্থল বন্দরে কোন প্রকার ঝামেলা পোহাতে হবে না।

পোর্ট ফি রশিদ হারিয়ে ফেলেছেন? তাহলে আপনি রশিদ পাবেন কিভাবে ?

অনলাইনে পেমেন্ট করে হারিয়ে ফেললে কোন সমস্যা নেই। আপনি চাইলে আবার ডাউনলোড করতে পারবেন। নিচের ছবিতে লাল চিহ্নিত বাটনে ক্লিক(Re-download Invoice) করুন। নিচে পাসপোর্ট নং ও কবে যেতে চাচ্ছেন সেটা দিয়ে সার্চ দিলে আপনি আপনার পেমেন্ট রশিদ পাবেন। সেটা ডাউনলোড করে নিন ।

এই ভিডিও লিংকে প্রবেশ করে দেখে নিতে পারেনঃ

আশা করি এই আর্টিকেল আপনাদের ভাল লাগবে ।

Leave a Comment