কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান ও ভ্রমন গাইডলাইন

কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান ও ভ্রমণ গাইডলাইন

১. পরিচিতি

ইতিহাস

কক্সবাজারের ইতিহাস প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। এর নামকরণ হয়েছে ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের নামানুসারে, যিনি ব্রিটিশ শাসনামলে এই অঞ্চলে কর্মরত ছিলেন। এটি পূর্বে “পালংকি” নামে পরিচিত ছিল।

ভৌগলিক অবস্থান ও আয়তন

কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এবং বঙ্গোপসাগরের তীরে বিস্তৃত। এর আয়তন প্রায় ২,৪৯১.৮৬ বর্গ কিলোমিটার।

হাট-বাজার

কক্সবাজারের প্রধান বাজারগুলোর মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার ফিশ মার্কেট, বার্মিজ মার্কেট, মহেশখালী জেটি বাজার, রামু বাজার ইত্যাদি।

আবহাওয়া

কক্সবাজারে সমুদ্র উপকূলীয় আবহাওয়া বিরাজমান। গ্রীষ্মকালে উষ্ণ ও আর্দ্র এবং শীতকালে তুলনামূলকভাবে ঠাণ্ডা ও শুষ্ক থাকে।

প্রধান নদী ও লেক

  • বাঁকখালী নদী
  • মাতামুহুরী নদী
  • নাফ নদী
  • মহেশখালীর বিভিন্ন লেক

জনসংখ্যা

জনসংখ্যা আনুমানিক ২৩ লক্ষের বেশি।

উপজেলা তালিকা

১. কক্সবাজার সদর
২. চকরিয়া
৩. উখিয়া
৪. টেকনাফ
৫. রামু
৬. মহেশখালী
৭. কুতুবদিয়া
৮. পেকুয়া

পৌরসভা তালিকা

  • কক্সবাজার পৌরসভা
  • চকরিয়া পৌরসভা
  • মহেশখালী পৌরসভা
  • টেকনাফ পৌরসভা

২. দর্শনীয় স্থানের তালিকা

কক্সবাজার জেলার দর্শনীয় স্থান সমুহ নিচে দেয়া হলো। 

০১. কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

০২. কলাতলী সী বিচ 

০৩. লাভনী পয়েন্ট সী বিচ 

০৪. সুগন্ধা বিচ

০৪. ইনানী সী বিচ 

০৫. হিমছড়ি ঝর্ণা ও পাহাড় 

০৬. সেন্ট মার্টিন প্রবাল দ্বীপ 

০৭. সমুদ্র বিলাস, সেন্ট মার্টিন 

০৮. সেন্ট মার্টিন উত্তর বিচ

০৯. ছেড়া দ্বীপ, সেন্ট মার্টিন 

১০. সোনাদিয়া দ্বীপ, মহেশখালী 

১১. শাহ পরীর দ্বীপ, টেকনাফ

১২. রামু রাবার বাগান, 

১৩. রামু বৌদ্ধ মন্দির

১৪. রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড, কক্সবাজার 

১৫. নিভূতে নিসর্গ পার্ক, চকোরিয়া

১৬. ইনানী র‍য়েল রিসোর্ট 

১৭. মাথিনের কূপ, টেকনাফ 

১৮. র‍য়েল টিউলিপ সী পার্ল রিসোর্ট, ইনানী

১৯. মেরিন ড্রাইভ রোড, কক্সবাজার 

২০. মারমেইড বিচ রিসোর্ট, কক্সবাজার 

২১. শামলাপুর সমুদ্র সৈকত, টেকনাফ

২২. ডুলা হাজারা সাফারি পার্ক, চকোরিয়া

২৩. কুতুবদিয়া দ্বীপ, (বাতি ঘর)

২৪. দরিয়া নগর, কক্সবাজার 

২৫. মাহাসিংদোগ্ৰী বৌদ্ধ মন্দির, কক্সবাজার 

২৬. মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, কক্সবাজার 

২৭.  পাতাবাড়ী বৌদ্ধ বিহার, কক্সবাজার 

২৮. বড়ঘোপ সমূদ্র সৈকত, কক্সবাজার 

২৯. রাখাইন পাড়া, কক্সবাজার 

৩০. মহেশখালী দ্বীপ / জেটি 

৩১. বার্মিজ মার্কেট, কক্সবাজার 

৩২. মাতামুহুরী নদী

৩৩. নাফ নদী সাইট

৩৪. এক গম্বুজ মসজিদ, কক্সবাজার 

৩৫. কানা রাজার সুড়ঙ্গ, উখিয়া 

৩৬. আদিনাথ মন্দির, মহেশখালী 

৩৭. বরইতলী মৎস্য খামার, কক্সবাজার 

৩৮. রাডার স্টেশন, কক্সবাজার 

৩৯. বীর কামলা দীঘি, টেকনাফ 

৪০. লামারপাড়া বৌদ্ধবিহার, কক্সবাজার 

৪১. লবণ রপ্তানি বাজার, কক্সবাজার 

৪২. কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন, কক্সবাজার

৪৩ পাটুয়ার টেক বিচ, মেরিন ড্রাইভ 

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ স্থান

১. কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ২. ইনানী সী বিচ ৩. হিমছড়ি ঝর্ণা ও পাহাড় ৪. সেন্ট মার্টিন প্রবাল দ্বীপ ৫. ছেঁড়া দ্বীপ ৬. মহেশখালী দ্বীপ ৭. সোনাদিয়া দ্বীপ ৮. মেরিন ড্রাইভ রোড ৯. শামলাপুর বিচ ১০. দরিয়া নগর

ঐতিহাসিক স্থান

১. রামু বৌদ্ধ মন্দির ২. আদিনাথ মন্দির, মহেশখালী ৩. মাথিনের কূপ, টেকনাফ ৪. বার্মিজ মার্কেট ৫. কানা রাজার সুড়ঙ্গ, উখিয়া

৩. ভ্রমণ গাইডলাইন

কিভাবে যাবেন? (যাতায়াত ব্যবস্থা)

  • বিমান: ঢাকা থেকে কক্সবাজার সরাসরি ফ্লাইট পাওয়া যায়।
  • ট্রেন: ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেনে চট্টগ্রাম পৌঁছে বাসে কক্সবাজার।
  • বাস: ঢাকা থেকে কক্সবাজার সরাসরি এসি ও নন-এসি বাস চলাচল করে।

কোথায় থাকবেন? (হোটেল ও আবাসন)

  • পাঁচ তারকা হোটেল: রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড, র‌য়েল টিউলিপ
  • মিড-রেঞ্জ হোটেল: সি প্যালেস, হোটেল কক্স ইন
  • বাজেট হোটেল: কলাতলী হোটেল, লাভনী হোটেল

কী খাবেন ও কোথায় খাবেন? (স্থানীয় খাবারের তালিকা ও জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট)

  • জনপ্রিয় খাবার: সামুদ্রিক মাছ, লবস্টার, চিংড়ি, বার্মিজ খাবার
  • জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট: প্যানোরমা রেস্টুরেন্ট, জালি রেস্টুরেন্ট

ভ্রমণের সেরা সময়

  • শীতকাল (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি)
  • বর্ষাকালে সমুদ্র উত্তাল থাকায় এড়িয়ে চলতে হবে।

ভ্রমণের জন্য বিশেষ টিপস

  • হালকা পোশাক পরিধান করুন।
  • সূর্যের অতিরিক্ত তাপ থেকে বাঁচার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
  • নির্ধারিত সময়ে সৈকতে যান এবং স্রোতের দিক লক্ষ করুন।

ভ্রমণে সতর্কতা ও পরামর্শ

  • রাতের বেলা সমুদ্রসৈকতে অজানা জায়গায় যাওয়া এড়িয়ে চলুন।
  • স্থানীয় আইন মেনে চলুন।

কী কী সাথে নেবেন? (ভ্রমণ চেকলিস্ট)

  • ব্যক্তিগত ওষুধ
  • ক্যামেরা
  • অতিরিক্ত পোশাক
  • চার্জার ও পাওয়ার ব্যাংক
  • সানগ্লাস

কেন ভ্রমণ করবেন?

কক্সবাজার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত এবং পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান।

কিছু টিপস:

  1. সৈকতে সাঁতার কাটার সময় সতর্ক থাকুন।
  2. পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন।
  3. সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতে ভোর বা সন্ধ্যায় সৈকতে যান।
  4. স্থানীয় পণ্য কেনার সময় দরদাম করতে ভুলবেন না।
  5. জরুরি জিনিসপত্র (পাসপোর্ট, টাকা, মোবাইল চার্জার) সঙ্গে রাখুন।

শেষ কথা

কক্সবাজার ভ্রমণ নিঃসন্দেহে এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেবে। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও সমুদ্রের বিশালতা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। তাই একটি পরিকল্পিত ভ্রমণ আপনার স্মৃতির ঝুলিতে অসাধারণ মুহূর্ত যোগ করবে।


কক্সবাজারে ভ্রমণ কেবল একটি স্থান ভ্রমণ নয়; এটি প্রকৃতির সঙ্গে মনের সম্পর্ক স্থাপনের একটি সুযোগ। পরিবার, বন্ধুবান্ধব বা একাকী ভ্রমণের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং স্থানীয় সংস্কৃতির মিশ্রণে কক্সবাজার আপনাকে মুগ্ধ করবে। তাই, পরবর্তী ছুটিতে কক্সবাজার আপনার গন্তব্য হোক!

Leave a Comment